প্রথম ম্যাচে জাপানের বিপক্ষে হোঁচট খাওয়ার পর শেষ ষোলোর কঠিন সমীকরণ মিলাতে স্পেনের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল জার্মানি। সমীকরণ মেলানো যায়নি। তবে সে পথ থেকে ছিটকেও যায়নি চারবারের বিশ্বকাপ জয়ীরা। পিছিয়ে পরে খাঁদের কিনারায় দাঁড়িয়ে থাকা জার্মানদের টেনে তুলেছে নিকলাস ফুয়েলখুগ।
তার করা ৮২ মিনিটের গোলে শেষ ষোলোর আশা বাঁচিয়ে রাখল জার্মানি।
দোহার আল বাইত স্টেডিয়ামে রোববার স্পেনের বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র’নিয়ে কিছুটা হাফ ছেড়ে বেঁচেছে জার্মানি। তবে পরের রাউন্ডে যাওয়ার সমীকরণটা জার্মানদের জন্য এখনও বেশ কঠিন। জার্মানের শেষ ম্যাচ কোস্টা রিকার বিপক্ষে। ওই ম্যাচে কোস্টা রিকার বিপক্ষে জয়ের সঙ্গে তাকিয়ে থাকতে হবে অন্য ম্যাচের দিকেও। কেননা, ৪ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের শীর্ষে আছে স্পেন। ৩ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে জাপান। তাদের সমান পয়েন্ট নিয়ে তিন নম্বরে কোস্টা রিকা। ১ পয়েন্ট নিয়ে তলানিতে জার্মানি।
এর আগে প্রথম ম্যাচে জাপানের বিপক্ষে ২-১ গোলে বিধ্বস্ত জার্মানরা বেশ পিছিয়ে থেকেই মাঠে নামে কোস্টা রিকাকে ৭-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে থাকা স্পেনের বিপক্ষে। আগের ম্যাচের গোল বন্যা এদিন হয়নি। তবে আজও সে কৌশল নিয়েই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলেছে লুইস এনরিকের দল। এগিয়েও যেতে পারত প্রথমেই। যদি না ডি-বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া দানি ওলমোর বুলেট গতির শট গোলরক্ষক মানুয়েল নয়ারের হাতে লেগে ক্রসবারে বাধা পেত।
৩৪তম মিনিটে ওলমোর পাস থেকে বক্সে দারুণ পজিশনে বল পেয়েছিলেন ফেররান তরেস। কিন্তু শট লক্ষ্যে না রেখে উড়িয়ে মেরেছেন বার্সেলোনা ফরোয়ার্ড। যদিও লাইন্সম্যান পরে অফসাইডের পতাকাও তুলেছিলেন। পাঁচ মিনিট পর আন্টোনিও রুডিগার হেডে বল জালে পাঠালে উল্লাসে মাতে জার্মানি, তবে ভিএআরে অফসাইডের সিদ্ধান্তে থামাতে হয় সেই উদযাপন। এরপর আর গোল না হলে গোলশূন্য ড্র’য়ে সুরাহা হয় প্রথমার্ধের খেলা।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে আক্রমণের ধার বাড়ায় দু’দলই। ৫৬ তম মিনিটে একটা ম্যাচে লিড নেওয়ার সুযোগ পায় জার্মানি। তবে জসুয়া কিমিখের জোরাল শট ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ঠেকিয়ে দেন উনাই সিমোন।
তিন দিন আগে গোল উৎসবের ম্যাচে কোস্টা রিকার জালে শেষ গোলটি করা মোরাতা এবার মাঠে নামার আট মিনিটের মাথায় এগিয়ে নেন দলকে। বাঁ দিক থেকে জর্দি আলবার পাস বক্সে পেয়ে দুর্দান্ত এক ফ্লিকে গোলটি করেন আতলেতিকো মাদ্রিদ ফরোয়ার্ড।
দুই মিনিট পর ম্যাচের নিয়ন্ত্রণও নিতে পারত তারা। কিন্তু ওলমোর পাস বক্সের বাইরে ফাঁকায় পেয়ে উড়িয়ে মারেন মার্কো আসেনসিও। এরপর আরও মরিয়া হয়ে ওঠে জার্মানরা। একের পর এক আক্রমণে তখন কাঁপছে স্পেনের রক্ষণ শিবির। ৭২ ও ৭৪তম মিনিটে পরপর আক্রমণে গিয়েও লক্ষ্য ভেদ করতে পারেনি জার্মানরা। তবে আক্রমণ থেকে পিছু হটেনি জার্মানরা।
অবশেষে ম্যাচের ৮৩তম মিনিটে আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। গোলের দেখা পায় জার্মানরা। মুসিয়ালার বাড়ানো বলে জার্মানদের সমতা এনে দেন ভার্ডার ব্রেমেনের ফরোয়ার্ড ফুয়েলখুগ। সমতায় ফিরে এগিয়ে যেতে চেষ্টা চালায় জার্মানরা। তবে জার্মানদের কাজটা সহজ করতে দেয়নি স্প্যানিশরা। এরপর আরও দুটো ভালো আক্রমণ করলেও গোলের দেখা পায়নি জার্মানি। তাতে ড্র নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় হ্যান্সি ফ্লিকের শিষ্যদের। আর এই ১-১ গোলের ড্র’য়ে শেষ ষোলোর স্বপ্ন এখনও কাগজে কলমে টিকে আছে জার্মানদের।
জার্মানদের শেষ ম্যাচ কোস্টা রিকার বিপক্ষে। আগামী ২ ডিসেম্বর রাত ১টায় মাঠে নামতে তারা। যেখানে জয় ভিন্ন পথ খোলা নেই তাদের জন্য। সেই সাথে তাকিয়ে থাকতে হবে একই সময় হওয়া স্পেন-জাপান ম্যাচেও।